কচু শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা [বিস্তারিত দেখুন]

বাংলাদেশে প্রায় সব এলাকাতেই কমবেশি কচু ও কচুর দেখতে পাওয়া যায়। কচুর কয়েকটি জাত রয়েছে যা আপনি দেখলে সহজে চিনতে পারবেন না। কচুর শাক শরীরকে সুস্থ রাখতে অনেক কার্যকরী।

আপনি যদি জানতে চান কচুর শাকের উপকারিতা কি কি রয়েছে তাহলে এ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারী পুরোটি পড়ে ফেলুন। আমরা কচু ও কচুর শাক দুটোই খেয়ে থাকি যার উপকারিতা অনেক রয়েছে রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে। 

পোস্টসূচিপত্রঃকচু শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা দেখুন

কচু কি 

কচু হচ্ছে এক ধরনের সুস্বাদু খাবার ও কন্দ জাতীয় উদ্ভিদ। ডাক্তারি পরামর্শ অনুযায়ী মানবদেহের জন্য কচু একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যকরী খাবার।মানুষ এই কচু জমিতে চাষ করে থাকেন এবং সফল ব্যবসায়ী হয়ে ওঠেন। বাড়ির আশেপাশে এই কচুর গাছ দেখা যায় যা আমাদের খাদ্য তালিকায় একটি খাদ্য।

খাদ্য উপযোগী কচু যেমন পানি কচু, মুখি কচু, মান কচু, ইত্যাদি। কচু আমাদের খাদ্যের চাহিদা পূরণ করে থাকে এবং অনেকে কচুর গাছের সৌন্দর্যের জন্য টবে রাখেন। অনেক কচুর গাছ অত্যন্ত সুন্দর ও তার ফুল গুলো সৌন্দর্যপূর্ণ।

কচুর উপাদান 

বিশ্বের মধ্যে সর্ব বৃহত্তম কচু উৎপাদনকারী দেশ বলতে গেলে সর্বপ্রথম নাইজেরিয়ার নামটি চলে আসে। নাইজেরিয়াতে কচু প্রতিবছর প্রায় ৩৩ লক্ষ মেট্রিক টন উৎপাদন হয়ে থাকে। নাইজেরিয়ার পাশাপাশি বর্তমানে বাংলাদেশে দিন দিন কচুর চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং উৎপাদন করা হচ্ছে।

কচু হচ্ছে একটি জনপ্রিয় খাদ্য যা প্রতিনিয়ত খাদ্য তালিকায় থাকে। কচু আমাদের বাড়ির আশে পাশে থাকার জন্য তা সংগ্রহ করা খুব সহজ হয়ে যায়। আগে তুলনায় বর্তমানে কচুর চাহিদা অনেক গুণ বেড়ে গেছে। 

বিভিন্ন ধরনের কচু 

অনেক সময় বাড়ির আশেপাশে ছাড়াও বনে বা জঙ্গলে কচু আপনা আপনি হয়ে থাকে সে কচুগুলোকে বলা হয় বুনো কচু। যেসব কচু খাওয়ার জন্য উপযোগী সেগুলো হচ্ছে মুখি কচু, পানি কচু, ওল কচু, পঞ্চমুখী কচু, দুধ কচু, মান কচু ইত্যাদি। 

ওল কচু 

ওল কচু রান্না করে খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু একটি খাবার। ওল কচুর মধ্যে রয়েছে পুষ্টি ও ঔষধি গুণ। গ্রীষ্ম মৌসুমীর সাধারণত বাংলাদেশ ওল কচু জন্মে বা দেখা যায়। ডাক্তারি পরামর্শ অনুযায়ী উচ্চ রক্তচাপ রোগীদেরকে ওল কচুর রস প্রতিষেধক হিসেবে খাওয়ানো হয়ে থাকে। বর্তমানে প্রায় সব জায়গাতেই ওল কচুর জনপ্রিয়তা রয়েছে। 

মুখি কচু 

মুখি কচুকে অন্যান্য তরকারির সাথে রান্না করে খাওয়া হয়ে থাকে। বাংলাদেশের নির্মত্ত সব অঞ্চলেই মুখি কচু চাষ করা হয়ে থাকে ও পাওয়া যায়। বাংলাদেশে মুখে কচুর অনেক রকমের নাম রয়েছে যেমন গুড়া কচু, ছড়া কচু, বিন্নি কচু, কুড়ি কচু, ইত্যাদি। মুখি কচুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং লৌহ। মুখে কচু শরীরের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী।

মান কচু 

মান কচুর ডগা ও পাতা উভয় খাওয়া যায়। মান কচু বাতের রোগীর জন্য অত্যন্ত উপকারী। মান কচুর শাকে রয়েছে পর্যন্ত আঁশ যা দেহের হজমে জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মান কচু শাক অত্যন্ত সুস্বাদু হওয়ার ফলে অনেকে মান কচু শাকের সাথে যে কোন তরকারি রান্না করে কে থাকেন। 

পানি কচু 

যে সকল কচু পানিতে হয় বা পানিতে চাষ করা হয়ে থাকে তাকে পানি কচু বলা হয়। পানিতে কচু হয়ে থাকে বিধায় এই কচুটির নামকরণ হয়েছে পানি কচু। পানি কচুর নাম একা জায়গাতে একাক রকম যেমন জাত কচু, বাঁশ কচু, জল কচু ইত্যাদি। সবজি হিসাবে পানি কচু অত্যন্ত সুস্বাদু ও রুচিসম্মত খাবার। বর্তমানে পানি কচু একটি জনপ্রিয় সবজি ও পুষ্টিমান খাবার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। 

কোন দেশে কচুর উৎপত্তি 

ধারণা করা হয়ে থাকে যে ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এর উৎপত্তি। প্রায় কয়েক বছর আগেও প্রচুর পরিমাণে কচু চাষ করা হতো বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। কচু যে কোন স্থানে জমাতে পারে যেমন পানি ও মাটি। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার পরামর্শ অনুযায়ী কচুতে অনেক ঔষধি গুনাগুন রয়েছে। কচুর শিকড়, পাতা, মুল ঔষধি হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

কচুর শাকের উপকারিতা

  • কচু শাক খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু ও রুচি সম্মত খাবার । কচুর শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম এবং আয়রন রয়েছে। 
  • কচুর সাথে ভিটামিন এ থাকার ফলে রাতকানা রোগ প্রতিরোধে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। চোখের সমস্যা দূর করতে প্রচুর খাওয়ার উপকারিতা অনেক।
  • কচুর শাক আঁশ জাতীয় হাওয়াই কুষ্ঠ কাঠিন্য দূর করতে সক্ষম এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে নিয়মিত কচুশাক খাওয়া প্রয়োজন।
  • কচুর শাকে প্রচুর পরিমাণে আয়োডিন থাকার ফলে গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি থেকে খুব অল্প সময়ে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • চুলকে মজবুত ও ঘন রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাবার হচ্ছে কচু শাক। চুলের জন্য ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অতি প্রয়োজন যা এই কচু শাকের মধ্যে রয়েছে।কচু শাক খাওয়ার মাধ্যমে চুল পড়া কমায় ও চুলকে মজবুত রাখতে এবং চুলকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • ডায়াবেটিকস কমাতে কচুর শাক খাওয়ার উপকারিতা অনেক কারণ কচুর শাকে চিনির পরিমাণ কম রয়েছে। ডায়াবেটিস রোগীরা নিশ্চিন্তে এই কচুর শাক খেতে পারেন।
  • আমাদের দেহে অক্সিজেন সরবরাহ সচল রাখার জন্য কচুর শাক বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। কেউ না কচুর শাকের মধ্যে রয়েছে আয়রন ও ফোলেট যা রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি করে এবং রক্ত চলাচল করতে সাহায্য করে।
  • কচুর শাক চোখের সমস্যা দূর করতে খাওয়া প্রয়োজন এবং এর উপকারিতা খুব দ্রুত পাওয়া যায়। 
  • রক্ত পরিষ্কার করতে কচু শাক খাওয়ার বিপরীত নেই। রক্ত পরিষ্কার করতে নিয়মিত কচু শাক খেলে কিছুদিনের মধ্যে রক্ত পরিষ্কার হয়ে যায়। রক্তের জন্য প্রচুর শাক অনেক উপকারী। 
  • শরীরে চুলকানি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কচু ও কচুর পাতা খাওয়ার বিকল্প নেই। নিয়মিত কচু শাক খেলে চুলকানি থেকে খুব অল্প সময় মুক্তি পাওয়া যায়।
  • দেহের হাড় গঠন ও শক্ত করতে কচুর স্বাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশে একটি জনপ্রিয় শাক ও সবজির মধ্যে কচু শাক পড়ে।
  • শরীরের দুর্বলতা কমাতে নিয়মিত প্রচুর শাক খাওয়া প্রয়োজন। কচুর শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন থাকার কারণে নিমিষেই শরীরে দুর্বলতা কমাতে সাহায্য করে। শরীরে কর্ম ঘন্টা বাড়ানোর জন্য শক্তি যোগায় কচু শাক। 
  • কচু শাকে প্রচুর পরিমাণে আয়োডিন রয়েছে যা শরীরের ক্ষয় রোধ করে। প্রতিনিয়ত খাদ্য তালিকায় কচু ও কচু শাক থাকা অপরিহার্য।
  • কচু শাকে মানুষ নানান ভাবে খেয়ে থাকে, অনেকে কচুর শাক দিয়ে মাছ মাংস রান্না করে খান আবার অনেকে শুধু কচুর শাক রান্না করে খান।
  • শরীরের দুর্বলতা কমাতে কচুর শাক খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। কচু শাক খেতে অনেকটা আঠালো যার ফলে শরীরের শক্তি জোগাতে ও শরীরের দুর্বলতা কমাতে সাহায্য করে। 

কচু শাকের রেসিপি 

মানুষ কচু শাকের রেসিপি খেতে অনেক আগ্রহী যার ফলে বর্তমানে কচু শাকের রেসিপি একটি চমৎকার জনপ্রিয় খাবার হিসেবে পরিচিত।

কচু শাকের সাথে যদি অন্য শাক মিশন করে খাওয়া যায় তাহলে অন্যরকম এক স্বাদ অনুভব করা যায়। কচু শাকের রেসিপি বানানোর জন্য কিছু নিয়ম অবলম্বন করতে হয়। বর্তমানে সচরাচর এখন কচুর শাকের রেসিপি পাওয়া যায় যার অনেক চাহিদা রয়েছে বাজারে।

কচু শাকের সাথে যে কোন খাবার রান্না করে খাওয়া যায়। কচু শাক অনেকটা আঠালো ধরনের হওয়ায় এটি অনেকে প্রাইস বানিয়ে খান। 

কচু শাকের অপকারিতা 

কচু শাকে তেমন অপকারিতা নেই বলেই চলে। সাধারণত অনেক সময় কচু শাক খেলে অনেকের গলা চুলকায়। কারণ কচু শাকের মধ্যে রয়েছে অক্সলেট নামক একটি উপাদান যার ফলে গলা হালকা পরিমাণে চুলকায়।

যাতে গলা না চুলকায় সেজন্য কচুর শাক রান্না করার সময় লেবুর রস ব্যবহার করা উচিত। কচুর পাতার সাথে লেবুর রস ব্যবহার করলে আর গলা চুলকাবে না এবং লেবু দেওয়ার জন্য খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু লাগে।

যাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণে এলার্জি রয়েছে তাদের জন্য কচু ও কচু শাক না খাওয়াই ভালো। 

মানুষের নানান সমস্যার কারণে অনেক সময় কচুর চা খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিয়ে কিছু সংখ্যক মানুষের। 

যাদের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কচু শাক খাওয়াই ভালো।

কচুর শাকের গুনাগুন 

ভিটামিন এ, বি, সি, লৌহ ও ক্যালসিয়াম রয়েছে কচুর শাকে। রাতকানা রোগ দূর করতে ভিটামিন এ এর প্রয়োজন রয়েছে। শরীরের ক্ষত সাড়তে ভিটামিন সি এর দরকার রয়েছে। কচুর শাকে আয়রন রয়েছে যা রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে।

গর্ভবতী মায়েদের জন্য কচু শাক খাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন কেননা এতে ভিটামিন এ ও আয়রনের চাহিদা পূরণ করে থাকে। কচু সকলের সাধ্যের মধ্যে কেউ না কচু ও কচু শাক দামে সস্তা। শরীরের পানির ঘাটতি দূর করার জন্য কচু শাকের ডাঁটা রান্না করে খাওয়া দরকার।

পর্যন্ত পরিমাণে আছ রয়েছে পশুর সাথে যা হজমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এলার্জির সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে কচুর পাতার উপকারিতা অনেক রয়েছে এবং চর্ম রোগের ক্ষেত্রেও কচুর শাকের উপকারিতা অনেক। কচু শাকের অনেক গুনাগুন রয়েছে যা প্রত্যেক মানুষের জন্য প্রয়োজন। 

কোথায় কচুর পাতা পাওয়া যায় 

সাধারণত বাড়ির আশেপাশে ও বোন জঙ্গলে কচু আপনা আপনি জন্মে থাকে যার ফলে কচুর পাতা পাওয়া যায়। কচুর পাতার মধ্যে অনেক ভাগ রয়েছে যার মধ্যে সবগুলো খাওয়ার উপযোগী নয়। যেসব কচুর পাতা খাওয়ার উপযোগী যেমন মুখি কচু, পঞ্চমুখী কচু, মান কচু, দুধ কচু, পানি কচু ইত্যাদি। 

কচুর পাতা সৌন্দর্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বর্তমানে অনেকে কচু ও কচুর পাতা চাষ করছে যার কারণে কচু ও কচুর পাতা বেচাকেনা হয়ে থাকে। শরীরের জন্য কচু ও  কচুর পাতার উপকারিতা অনেক রয়েছে। নিয়মিত আমাদের খাদ্য তালিকায় কিছু শতাংশ কচু ও কচু শাক রাখা অতি প্রয়োজন।

কচু ও কচু শাক রান্না

কচুর অনেক প্রজাতি থাকার কারণে প্রজাতি ভেদে কচু শিকড়, কচুর মুল, পাতা সবাই খাওয়া যায়। বিশেষ করে কচুর পাতা দিয়ে অনেক রেসিপি ও তৈরি করা যায়। কচুর লতির সাথে চিংড়ি মাছ রান্না করা হয় যা খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু ও রুচি সম্মত। যার ফলে অনেকের এটিকে একটি পছন্দের খাবারের মধ্যে রাখেন।

অনেকে শুধু কচুর পাতা ও কচু রান্না করে খান। অনেকে কচুর লতির ভুনা ও কচুর লতি দিয়ে ইলিশ এবং লতির কোর্মা করে খান যা বর্তমানে অনেক জনপ্রিয়। আরো অনেক রকম খাদ্য তৈরি করা যায় সরিষা বাটাই কচুর লতি একত্রিত করে। বর্তমানে কচু ও কচু শাক জনপ্রিয়তা শিষ্য রয়েছে। 

অনেকে মাংসের সাথে কচু পছন্দ করেন। আলু,বেগুন এর সাথেও কচু একটি মানানসই খাবার যা খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু। কচু ও কচুর পাতা যে কোন খাবারের সাথেই খাওয়া যায় এবং এর উপকারিতা অনেক রয়েছে শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য। রোগ প্রতিরোধ কমাতে কচুর শাক ও কচু অনেক উপকারী খাবার। 

কচু চাষাবাদ করার পদ্ধতি 

বর্তমানে কচু ও  কচুর শাকের এত পরিমাণে চাহিদা বেড়ে গেছে যে, মানুষ চাষাবাদ করতে শুরু করেছে বাজারে যাওয়ার চাহিদা প্রচুর পরিমাণে। কচু চাষাবাদের মাধ্যমে খুব অল্প সময়ে লাভবান হওয়া যায়। কচু শরীরকে সুস্থ রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচের কয়েকটি নিয়মের মাধ্যমে কচুর চাষাবাদ করা হয়ে থাকে।

উপযুক্ত মাটি ও জাত

কচুর জন্য উপযুক্ত মাটি হচ্ছে পল্লী দোআঁশ ও এয়ারটেল মাটি এবং কচু জাত হচ্ছে লতিরাজ।

বৈশিষ্ট্য

কচু শাকের পাতা বেশিরভাগ বেগুনি হয়ে থাকে, কচু ও কচু শাকের জীবনকাল হচ্ছে ১৮০ থেকে ২১০ দিন। বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই কচু ও কচুর শাক চাষাবাদ করা যায়।

ফলন

কচুর ফলন হয় প্রতি হেক্টর জমিতে লতি ২৫ থেকে ৩০ এবং কাণ্ড ১৮ থেকে ২০।

চারা রোপন

চারা রোপণের জন্য উপযুক্ত সময় হয়েছে কার্তিক মাস। প্রতি শতকে প্রায় ১৫০ টি লতা রোপন করতে হয় এবং লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব হবে ২ ফুট এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব হবে ১.৫ ফুট। তাহলে ভালো মানের ফসল আশা করা যায়। 

স্যার প্রয়োগ

নিয়মিত সার প্রয়োগ করতে হবে ইউরিয়া ৬০০ গ্রাম, টিএসপি ৫০০ গ্রাম, এমওপি ৭৫০ গ্রাম, গোবর ৫০ কেজি। ইউরিয়া প্রয়োগের জন্য দুই থেকে তিন কিস্তিতে ভাগ করে নিতে হবে এবং প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম কিস্তির প্রয়োগ করতে হবে রোপণের ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে। 

সেচ ও আগাছা দমন 

কচুর গোড়ায় সবসময় পানি থাকা প্রয়োজন এবং লতিরাজ জাতের জন্য পানির গভীরতা ৮ থেকে ১০ সেন্টিমিটার প্রয়োজন। নিয়মিত আগাছা দমন করতে হবে যাতে আগাছা বড় হয়ে না যায়। আগাছা বড় হয়ে গেলে ফসলের ক্ষতি করবে যার ফলে ফসল ভালো হবে না।

কচুর রোগ ও পোকামাকড় 

সাধারণত কচুর পাতায় মড়ক রোগ দেখা দেয়। কচুর গাছে পোকামাকড় ও অন্য কোন রোগ তেমন দেখা যায় না। পোকামাকড়ের দিক দিয়ে কচুর গাছ অনেক এগিয়ে রয়েছে।

পোকার আক্রমণের ফলে পাতার ওপরে বাদামী রঙের গোলাকার দাগ পড়ে যাতে বুঝা যায় পোকার আক্রমণ হয়েছে। পাতায় আক্রমণের ফলে পরবর্তীতে এগুলো বাড়তে থাকে এবং পাতা ঝলসে যায়। আস্তে আস্তে কীটনাশক বা হার প্রয়োগ না করলে তা কচু ও কন্দ চলে যায় যার ফলে ভালো ফলন পাওয়া যায় না।

ফসলের ব্যবস্থাপনা 

ফসলের রোগ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে দুই গ্রাম রিডোমিল এম জেড ৭২ ডব্লিউ প্রতি লিটার পানিতে ব্যবহার করতে। একত্রে বিশাল করে কয়েকদিন পর পর তিন থেকে চার বার প্রয়োগ করতে হবে যার ফলে রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে এবং প্রয়োগের সময় ট্রিকস মিশিয়ে নেওয়া প্রয়োজনীয়তা অনেক।

ফসল সংগ্রহ 

সাধারণত বর্তমানে চারা রোপনের দুই মাস থেকে সাত মাস পর্যন্ত লতি হয়ে থাকে যার ফলে সংগ্রহ করা যায়। সংগ্রহ করার পরে তা বাজারজাত করা হয়ে থাকে। ভালো ফলনের জন্য ৭ মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। কচু ও প্রচুর শাক দুটোই শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং রোগ প্রতিরোধ করে থাকে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url