একটি পেয়ারায় কত ক্যালরি থাকে দেখে নিন [বিস্তারিত দেখুন]

পেয়ারা হচ্ছে একটি সুস্বাদু ফল যা বারো মাসি পাওয়া যায়। বাংলাদেশের প্রায়ই অনেক জায়গাতে পেয়ারার বাগান তৈরি করা হচ্ছে যা থেকে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে আমদানি করা হচ্ছে।

পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি থাকে যা শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খুব অল্প সময়ে ওজন কমাতে পেয়ারার উপকারিতা অনেক রয়েছে।

পোস্টসূচিপত্রঃএকটি পেয়ারাতে কত ক্যালরি থাকে চলুন দেখে আসি 

পেয়ারা কি 

পেয়ারা হচ্ছে একটি ফল যা খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু। সাধারণত পেয়ারা সবুজ রংয়ের হয়ে থাকে এবং অনেক সময় অন্য রঙেরও দেখা যায়। অনেক সময় লাল পেয়ারা দেখতে পাওয়া যায় যাকে বলা হয়ে থাকে রেড আপেল।

বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় ১০০ টির বেশি প্রজাতির পেয়ারা রয়েছে। পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি ও ভিটামিন রয়েছে যা আমাদের শরীরের চাহিদা পূরণ করে থাকে। 

পেয়ারার উপকারিতা 

পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন,পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম রয়েছে। একটি পেয়ারার মধ্যে রয়েছে প্রায় চারটি কমলার চেয়েও বেশি ভিটামিন যা অনেক মানুষ জানে না। পেয়ারার খোসা খাওয়ার মধ্যেও অনেক উপকারিতা রয়েছে অন্যদিকে কমলার খোসা খাওয়া যায় না।

ক্যান্সার প্রতিরোধে পেয়ারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে যার কারণ পেয়ারার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে এন্টি অক্সিডেন্ট ও পলিফেনল রয়েছে। শরীরের জন্য একটি পেয়ারা কতটা উপকারী তা যদি জানতেন তাহলে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় কিছু শতাংশ পেয়ারা রাখতেন।

প্রত্যেক মানুষের শরীরের জন্য প্রতিদিন কিছু শতাংশ পেয়ারা খাওয়া উচিত যা শরীরকে শক্তি জোগায় ওর শরীরকে সরোজ রাখে।

পেয়ারার মধ্যে কি কি রয়েছে 

১০০ গ্রাম পেয়ারার মধ্যে যা রয়েছে 

পানি :৮৬.১০ গ্রাম 

শক্তি :৫১ কি.ক্যালোরি

প্রোটিন :০.৮২ গ্রাম 

আঁশ :৫.৪ গ্রাম 

ফসফরাস :২৫ কি.গ্রাম

সোডিয়াম :৩ মি.গ্রাম

ভিটামিন :৭৯২ আই ইউ 

ক্যালোরি :৬৮

চর্বি :১ গ্রাম 

কলেক্টেরল :নেই 

পটাশিয়াম :৪১৭ মিলিগ্রাম

কার্বোহাইড্রেট :১৪ গ্রাম 

ক্যালসিয়াম :১%

ম্যাগনেসিয়াম :৫%

পেয়ারার বৈশিষ্ট্য 

বর্তমানে অনেক ধরনের পেয়ারা বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায় যা একটি বহু বর্ষজীবী উদ্ভিদ। কিছু উন্নত মানের পেয়ারা জাত রয়েছে যেগুলোর মেয়াদ তিন বছর থেকে ৫ বছর। পাঁচ বছর পরে সেই পেয়ারার গাছগুলো অটোমেটিক মরা যাবে বা পেয়ারা আর হবেনা।

বর্তমানে পেয়ারার পুষ্পে পাঁচটি দল হয়ে থাকে। সব থেকে পেয়ারা জনপ্রিয় হচ্ছে উত্তরপ্রদেশে। থাই পেয়ারা যা খুব অল্প সময়ে বড় হতে পারে যা বাজারজাত করা যায়। পেয়ারার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এগুলো শীতকাল ও গরমকালে ভালো পরিমাণে উৎপাদন হয়। 

পেয়ারা খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু হওয়ার ফলে এগুলো বাজারজাত করতে কোন সমস্যা হয় না। বাজারে পেয়ারার প্রচুর চাহিদা রয়েছে যা নিয়ে লসের কোন কথা উঠে আসে না। অনেক পেয়ারা ব্যবসায় রয়েছে যারা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গাতে পেয়ারা পাঠিয়ে ব্যবসা করে থাকেন। 

পেয়ারার কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যেগুলো হচ্ছে ছোট, বড়, মাঝারি ইত্যাদি। অনেক পেয়ারা রয়েছে যেগুলো বড় হতে অনেক সময় লাগে। আবার অনেক পেয়ারা রয়েছে যেগুলো অল্প কিছু দিনের মধ্যেই অনেক বড় হয়ে যায় এবং বাজেট করা যায় যেমন থাই পেয়ারা। পেয়ারার আকার আকৃতি ও ভিন্ন হয়ে থাকে।

পেয়ারা চাষের প্রযুক্তি 

পেয়ারা চাষের জন্য নিচের কয়েকটি প্রযুক্তি অবলম্বন করা উচিত যাতে পেয়ারার ভালো ফলন পাওয়া যায়।

পেয়ারাতে পলিব্যাগ বা ব্যাগিং প্রযুক্তির ব্যবহার 

ভালো পেয়ারা উৎপাদনের জন্য অবশ্যই পলিব্যাগ ব্যবহার করার কার্যকারিতা রয়েছে। পেয়ারা গাছে সব থেকে বেশি সমস্যা হয়ে থাকে পেয়ারাই পলিব্যাগ ব্যবহার না করার ফলে। পলিব্যাগ ব্যবহারের নিয়ম হচ্ছে পেয়ারা যখন একটু বড় হবে তখন পেয়ারাটিকে পলিব্যাগ দিয়ে ঢেকে দিতে হবে এবং দুই পাশে দুইটি পিন মারতে হবে।

যার ফলে পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে বেঁচে যাবে এবং ফলের রং ও মান বৃদ্ধি পাবে। পলিব্যাগে নিচের দিকে অল্প কিছু শীতল রাখতে হবে যার ফলে ভিতরে বাতাস ঢুকতে পারে এবং ভিতরে পানি যাতে জমে না থাকে এদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কোনভাবে যদি পেয়ারার পলিব্যাগ এর মধ্যে পানি জমে থাকে তাহলে সেই পানি থেকে ছত্রাকের আক্রমণ বেড়ে যায়।

ব্যাগিং করার ফলে পেয়ারাতে কোন মাছি পোকা গায়ে বসে না এবং ফলটি অত্যন্ত সুন্দর আকৃতির হয়। ব্যাগিং করার আর কি উপকারিতা হচ্ছে আমরা যখন পেয়ারা গাছে কীটনাশক ব্যবহার করি তখন এতে সরাসরি কীটনাশক পড়ে না। মানসম্মত পেয়ারা পাওয়ার জন্য পেয়ারাতে পলিব্যাগ বা ব্যাগিং ব্যবহার করতে হবে।

জোর কলমের মাধ্যমে পেয়ারা 

বর্তমানে অনেক চাষী বেছে নিচ্ছে এই পেয়ারা যার মাধ্যমে সফল ও প্রতিষ্ঠিত হতে পারছেন। আমাদের দেশে পেয়ারা সাধারণত বীজ থেকে উৎপাদন করা হয়ে থাকে ও চাষ করা হয়। অনেকে বাণিজ্যিকভাবে চারা উৎপাদন করে কৃষকের কাছে বিস্তার করছেন। যার ফলে কি সব তা থেকে লাভবান হতে পারছেন।

জোর কলমের মাধ্যমে প্রতিনিধি গাছ তৈরি করে পেয়ারার ফসল উৎপাদন করা হয়ে থাকে। বর্তমানে আঙুর পেয়ারা বীজ ছাড়া অনেক চিকন হয়ে থাকে যার ফলে জোড় কলমের ব্যবহার করা হয়। নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে অনেক ভাবেই পেয়ারার উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায় এবং নিয়মিত সার প্রয়োগ ও পেয়ারার যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে।

পেয়ারার বৃদ্ধি বাড়ানোর জন্য কুশিভাঙা বা ডাল ভাঙ্গা

পেয়ারা চারা লাগানোর পর একটু সময় হচ্ছে বৈশাখ মাস। পেয়ারা চারা লাগানোর পর ৮ থেকে ৯ মাস বয়সে গাছে ফল এসে থাকে। যার ফলে গাছ অনেকটা বেঁকে যায় এবং অতিরিক্ত ফল কমানোর অতিরিক্ত ডাল ভাঙা হয় বা কুশিভাঙা হয়।

কুশিভাঙার অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আবার নতুন অতিরিক্ত কুশি চলে আসে যা পরবর্তীতে আর ভাঙার দরকার হয় না‌। এরপর আস্তে আস্তে ফসল বৃদ্ধি পেয়ে থাকে যার ফলে বাজারজাত করা সহজ হয়ে যায়। গাছে যদি অতিরিক্ত পেয়ারা থাকে তাহলে পেয়ারা অনেক সমস্যা হয়ে থাকে রোগ-ব্যাধি ও দ্রুত বৃদ্ধি পায় না যার জন্য গাছের ডাল ভেঙে ফেলতে হবে। 

পেয়ারা গাছের ফুল ও ফল ছিঁড়ে পেয়ারার বৃদ্ধি বাড়ানো 

বর্ষাকালে পেয়ারার মান অনেক খারাপ হয়ে থাকে যেমন অনেক রোগ ও স্বাদ কম। বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি হওয়ার কারণে পেয়ারাতে রোগের সংখ্যা বেড়ে যায়। বর্ষাকালে পেয়ারার কলম কমাতে হবে যার জন্য পেয়ারার ডাল থেকে ফুল ও ফল কমিয়ে দিতে হবে যাতে করে শীতকালে পেয়ারা বাড়ানো যায়।

শীতকালের পেয়ারা অনেক মিষ্টি ও সুস্বাদু হয়ে থাকে এবং রোগ ব্যাধিও কম হয়। আগস্ট থেকে অক্টোবর মাসে প্রচুর ফুল আছে যার ফলে শীতের সময় অনেক পেয়ারা পাওয়া যায়।। বর্তমানে অনেক ব্যবসায়ী এই পন্থা অবলম্বন করে থাকেন লাভবান হওয়ার জন্য। 

১২ মাসি পেয়ারার ফলন 

বর্তমানে অনেক উন্নত মানের পেয়ারার প্রজাতি রয়েছে যেগুলো সারা বছর ফলন দিয়ে থাকে। চারা লাগানোর সময় অবশ্যই উন্নতমানের চারা লাগানো প্রয়োজন এবং যারা পরীক্ষা করে নিতে হবে নেওয়ার সময়।

বারোমাসি পেয়ারার ফলন নির্ধারিত বছরের জন্য লাগানো হয়ে থাকে যেমন তিন থেকে পাঁচ বছর। সময় অতিক্রম হওয়ার ফলে বারোমাসি পেয়ারা জাত ফলন দেওয়া বন্ধ করে দেয় বা গাছ মরে যাই। এরপর পরবর্তীতে আবার নতুনভাবে গাছ লাগানো হয়ে থাকে বারোমাসি পেয়ারার ফলনের জন্য। 

অসময়ের ফল ও শাখা-প্রশাখা বাকানোর পদ্ধতি

পেয়ারা গাছের শাখা প্রশাখা বাঁকানোর ফলে অসময়ের ফুল ধরে যা ফলন দিয়ে থাকে। পেয়ারা গাছের শাখা-প্রশাখা বাঁকানোর জন্য একটি নির্ধারিত বয়স হতে হবে গাছের যেমন দেড় বছর থেকে দুই বছর। নিয়মিত কয়েক বছর এই পদ্ধতি অবলম্বন করার ফলে অসময়ের ফুল ধরে থাকে কাছে।

পেয়ারা গাছের শাখা প্রশাখা বাকানোর জন্য এপ্রিল ও জুন মাস সর্বতম। পেয়ারা গাছে সার ও পানি দেওয়ার ১০ থেকে ১৫ দিন পরে ডাল বাঁকানো হয়ে থাকে। শাখা প্রশাখা বাকানোর মাধ্যম হচ্ছে একটি ডালের সাথে আরেকটি ডাল বেধে দেওয়া এবং মাটিতে খুঁটি পুতে ডাল বাঁকানো হয়ে থাকে।

বর্তমানে এই পদ্ধতি অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যার ফলে বারোমাসি পেয়ারা পাওয়া যায়। পেয়ারা চাহিদা প্রচুর পরিমাণে রয়েছে যা মানুষের চাহিদা পূরণ করে থাকে এবং বিদেশেও আমদানি করা হয়ে থাকে। পেয়ারা চাষ করে খুব অল্প সময়ে লাভবান হওয়া যায়। 

পেয়ারার কয়েকটি নাম

বরিশাল : গোইয়া 

ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া : গইয়ম 

চট্টগ্রাম : পেয়ালা,গইয়ম

সিলেট: সফরি 

নোয়াখালী : হেয়ারা 

ময়মনসিংহ : হবরি 

রাজশাহী : পেয়ারা 

পেয়ারার পুষ্টিগুণ 

  • শরীরকে সুস্থ রাখতে ভিটামিনের অধিক প্রয়োজন রয়েছে যা এই পেয়ারার মধ্যে পাওয়া যায়। শরীরকে সুস্থ ও সাথে সাথে সাহায্য করে পেয়ারা।
  • পেয়ারাতে স্বল্প পরিমাণে ফাইবার এবং কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকে। যার ফলে এটি খেলে রক্তের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ থাকে এবং ডায়াবেটিস এর ঝুঁকি থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যায়।
  • শরীরের ব্যালেন্স বাড়াতে পেয়ারার উপকারিতা রয়েছে যার কারণ এতে রয়েছে সোডিয়াম এবং পটাশিয়াম। যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের জন্য পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা অনেক রয়েছে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে। 
  • পেয়ারা খাওয়ার ফলে হার্টের অসুখ দূর হয়ে যায় এবং শরীরের চর্বি কমাতে সাহায্য করে এই পেয়ারা। হাটকে সুস্থ রাখতে পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা অনেক।
  • ফাইবার জাতীয় ফল হচ্ছে পেয়ারা তার জন্য পেয়ারা খেলে কুষ্ঠ কাঠিন্য দূর হয়। কারো যদি ঠিক মতো পায়খানা না হয় তাহলে এই সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে পেয়ারা খাওয়া। 
  • যাদের রাতকানা রোগ রয়েছে এবং দৃষ্টিশক্তির সমস্যা তাদের জন্য এই পেয়ারা নিয়মিত খাওয়া উচিত কেননা পেয়ারাতে ভিটামিন এ আছে যা চোখের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চোখের ছানি পড়া থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য পেয়ারা খাওয়া উচিত। 
  • গর্ভবতী অবস্থায় পেয়ারা খাওয়ার খুব প্রয়োজন রয়েছে কেননা পেয়ারাতে ফলিক এসিড রয়েছে যা গর্ভাবস্থায় অনেক উপকারী। গর্ভবতী অবস্থায় ডাক্তার ফলিক এসিড দিয়ে থাকেন কারণ এটি বাচ্চার নার্ভাস কে উন্নত করতে সাহায্য করে। গর্ভবতী অবস্থায় ফলিক এসিড এর জন্য পেয়ারা খাওয়া কার্যকারিতা অনেক রয়েছে। বাচ্চাদের কে রোগব্যাধি থেকে দূর করার জন্য পেয়ারা খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • যাদের কফ সমস্যা রয়েছে বা কফ দূর হয় না তাদের জন্য এ পেয়ারা হতে পারে মহা ঔষধ কেননা পেয়ারাতে রয়েছে আয়রন যা কক দূর করতে সাহায্য করে। অনেকের কক জমে যায় যা খুব সহজে পড়তে চায় না অনেক ওষুধ খাওয়ার পরও। পেয়ারা খাওয়ার মাধ্যমে খুব অল্প সময়ে কফ উঠতে শুরু করে এবং শরীরকে সতেজ অসুস্থ রাখতে পারে।
  • জীবাণু ধ্বংস করার জন্য পেয়ারার পাতায় রয়েছে এন্টি- ইনফ্লামেটরি যা জীবাণু ধ্বংস করতে খুব শক্তিশালী। যাদের দাঁত ব্যথা করে তাদের জন্য এই পেয়ারা পাতাটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ। আপনি ঘরে বসেই দাঁতের ব্যথা দূর করতে পারবেন এই পেয়ারা পাতা চিবানোর মাধ্যমে। 
  • যাদব ব্রণের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য এই পেয়ারা খাওয়া ও পেয়ারার পাতা মাখা অত্যন্ত উপকারী। পেয়ারা খাওয়ার মাধ্যমে ব্রণের রক্ত সঞ্চালনকে সাহায্য করে। পেয়ারা পাতা ভোরের ওপর পিছে লাগালে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এই ব্রণ সেরে যায়। 
  • ভিটামিন সি এর অভাবে অনেকের মুখে সাদা দাগের মতো হয়ে থাকে যাকে বলা হয় আলসার এর থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নিয়মিত পেয়ারা খাওয়া যেতে পারে। পেয়ারা খাওয়ার মাধ্যমে আলসার দূর করা খুব সহজ। 
  • ওজন কমানোর জন্য পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা অনেক কেউ না পেয়ারাতে রয়েছে গ্লুকোজের পরিমাণ কম। যারা ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছেন তাদের জন্য এই নিয়মিত সকাল ও বিকালে পেয়ারা খাওয়া উচিত। 
  • ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সাথে লড়াই করতে সক্ষম হচ্ছে পেয়ারা। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য পেয়ারা খাওয়া সকলের উচিত।
  • মহিলাদের জন্য প্রতিমাসের পেটের ব্যথা কমাতে পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা উপকারিতা রয়েছে। পেটের ব্যথা দূর করার জন্য আপনি আশ্চর্য হবেন যে যদি আপনি পেয়ারার পাতা চিবিয়ে বা রস করে খান তাহলে পেটের ব্যথা খুব দ্রুত কমে যাবে। এজন্যই আপনি প্রতিনিয়ত এই পেয়ারা ও পেয়ারার পাতা আপনার সাথে রাখতে পারেন যা আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পেয়ারা কি ওজন কমাতে পারে 

ওজন কমানোর জন্য পেয়ারার উপকারিতা অনেক রয়েছে যা সকল ফলকে টেক্কা দিতে সক্ষম। পেয়ারাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

পেয়ারা খাওয়ার ফলে আপনার খুব অল্প সময়ে ক্ষুধা লাগবে না যা পেটকে অনেকক্ষণ ভরা রাখতে সাহায্য করে। পেয়ারাতে আপেল, কমলালেবু ও আঙ্গুরের তুলনায় চিনির পরিমাণ অনেক কম রয়েছে। 

পেয়ারা খেলে আপনার শরীরের ১২% ফাইবার প্রয়োজন পূরণ করে থাকবে। যাদের অতিরিক্ত মেদ হয়ে গেছে তারা নিয়মিত পেয়ারা খাওয়ার মাধ্যমে বাড়তি মেদ ঝরিয়ে ফেলতে পারেন। 

কোষ্ঠকাঠিন্যের মতন কঠিন কঠিন রোগ নিমিসেই দূর করে ফেলতে পারে এই পেয়ারা যার ফলে পেয়ারা কার্যকারিতা অনেক রয়েছে।

পেয়ারার কার্যকারিতার জন্য পেয়ারা কে বলা হয়ে থাকে নেগেটিভ ক্যালরি ফুড। যার শরীরকে সতেজ রাখতে ও মেদ কমাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

পেয়ারার উপকারিতা দিক দিয়ে পাকা পেয়ারা থেকে কাঁচা পেয়ারার উপকারিতা অনেক রয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পেয়ারা রস ডায়াবেটিস কমাতে অনেক সাহায্য করে। 

পেয়ারার স্বাস্থ্য উপকারিতা 

অনেকে পেয়ারার উপকারিতা জানেনা বিধায় পেয়ারা খেতে চায় না। ডাক্তারি পরামর্শ অনুযায়ী নিশ্চিত করে বলা যায় যে আপেল, কমলা ও আঙ্গুরের চাইতে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এই পেয়ার।

শরীরের জন্য পেয়ারা খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের কর্মশক্তি বাড়ানোর জন্য পেয়ারার কার্যকারিতা অনেক।

  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে পেয়ারা। 
  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্তন করতে পারে পেয়ারা। 
  • হাটকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে পেয়ারা। 
  • ডায়াবেটিস কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে পেয়ারা। 
  • ঠান্ডা লাগা থেকে  দূরে রাখতে সাহায্য করে পেয়ারা।
  • চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে পেয়ারা। 
  • পেটের ব্যাথা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে পেয়ারা। 
  • শরীরে থাইরয়েড গ্রন্থি কে সতেজ রাখতে সাহায্য করে পেয়ারা। 
  • শরীরের পেশি গুলোকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে পেয়ারা। 
  • ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে পেয়ারা। 

আপেল খাওয়া ভালো না পেয়ারা খাওয়া ভালো 

আপেল ও পেয়ারা দুটি ফলে খাদ্য উপাদান একই রয়েছে কিন্তু পার্থক্যটা শুধু রয়েছে উপাদান পরিমাণে। 

সেজন্য পুষ্টিগণের দিক দিয়ে বিচার করলে আপেলের চাইতে পেয়ারার গুণ অনেক পরিমাণে বেশি রয়েছে।

আপেল ও পেয়ারাকে যদি কেটে কিছুক্ষণ খোলা বাতাসে রাখা যায় তাহলে কিছুটা কালচে বর্ণ ধারণ করে দুটোই একই রকম। ডাক্তারি পরামর্শ অনুযায়ী আপেলের চেয়ে পেয়ারা খাওয়া উপকারিতা অনেক রয়েছে যা শরীরের জন্য অত্যন্ত কার্যকর।

আপেল ও পেয়ারা দুটোই বিবেচনা করে বলা যায় যে পেয়ারা খাওয়াই ভালো এবং এই পেয়ারা ধনী গরিব সকল মানুষই খেতে পারবে। পেয়ারা স্বল্প মূল্যে পাওয়া যায় যার ফলে দরিদ্রদের কিনতে কোন সমস্যা হবে না কিন্তু অনেক দরিদ্র আপেল কিনে খেতে পারেন না।

আপনার অবশ্যই প্রাধান্য দেওয়া উচিত পেয়ারার প্রতি যা আপনার বাড়ির কাছে চাষ করা হয়ে থাকে এবং আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

পেয়ারা খাওয়ার নিয়ম 

সাধারণত দিনে একটি পেয়ারা খাওয়াই ভালো। যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাদের জন্য ব্যায়ামের আগে ও পরে পেয়ার খাওয়া উচিত। রাতে পেয়ারা থেকে বিরত থাকাই ভালো। রাতে পেয়ারা খেলে অনেক সময় ঠান্ডা ও কাশির সমস্যা হতে পারে।

পেয়ারা খাওয়ার উপযুক্ত সময় বলতে গেলে দুপুর। সকলের জন্য দুপুরে পেয়ারা খাওয়া উচিত যার উপকারিতা অনেক পাওয়া যায়।

পেয়ারার অপকারিতা

  • যাদের পেটের ফাঁপার সমস্যা রয়েছে তারা পেয়ারা খুব অল্প পরিমাণে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। 
  • যাদের আইপিএস এর সমস্যা রয়েছে তারা পেয়ারা না খাওয়ারই চেষ্টা করবেন। 
  • যাদের সিনড্রোম সমস্যা রয়েছে তারা খুব অল্প পরিমানে এই পেয়ারা খাবেন কখনই বেশি পরিমাণে খাবেন না। 
  • এবং যাদের আরও নানান সমস্যা রয়েছে তারা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পেয়ারা খাবেন।
  •  চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পেয়ারাতে অপকারিতা চেয়ে উপকারিতা অনেক পরিমাণে বেশি রয়েছে।

পেয়ারা খেলে কি গ্যাস হয় 

সাধারণত পেয়ারা খেলে গ্যাস হয় না কিন্তু নিয়মিত অতিরিক্ত পরিমাণে পেয়ারা খেলে গ্যাস হয়ে থাকে। অতিরিক্ত পরিমাণে পেয়ারা খেলে পেটের সমস্যা হতে পারে যেমন পেট ফেঁপে যেতে পারে। যার ফলে গ্যাস হতে পারে।

এজন্য আপনাকে নির্ধারিত পরিমাণে পেয়ারা খেতে হবে কখনোই অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। অনেক সময় পেট ফুলেও যেতে পারে অধিক পরিমাণে পেয়ারা খাওয়ার ফলে।

খালি পেটে পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা 

খালি পেটে পেয়ারা খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে স্মৃতিশক্তি বাড়াতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পেয়ারা খেলে পেট পরিষ্কার থাকে।

 পেয়ারার মধ্যে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন থাকায় রক্ত চলাচলে সাহায্য করে। খালি পেটে নিয়মিত পেয়ারা খেলে শরীর চাঙ্গা থাকে ও উৎফুল্ল থাকে যা শরীরকে শক্তি যোগায়।

পাকা পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা

পাকা পিয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে কিন্তু নিয়মিত খাওয়া ভালো না। পাকা পেয়ারা খেলে যাদের রক্তচাপ আছে খুব অল্প সময়ের রক্তচাপ কমে যাবে। পাকা পেয়ারা থেকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি ও ভিটামিন পাওয়া যায়। পাকা পেয়ারা অত্যন্ত সুস্বাদু হওয়ায় মুখে স্বাদ আনতে অনেক সাহায্য করে থাকে।

পেয়ারা খেলে কি ওজন বাড়ে

নিয়মিত পেয়ারা খেলে কখনোই ওজন বাড়ে না বরং ওজন কমাতে সাহায্য করে পেয়ারা। পেয়ারাতে রয়েছে লো ক্যালোরি ফুড যা ওজন কমাতে থেকে সাহায্য করে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওজন ভাড়া নিয়ে কোন ভয় নেই পেয়ারাতে।

পেয়ার একটি সুস্বাদু ও রুচিসম্মত ফল। প্রত্যেক মানুষের দৈনন্দিন জীবনে কিছু শতাংশ পেয়ারা খাওয়া উচিত যার ফলে শরীরকে সুস্থ ও সতেজ রাখতে সাহায্য করে।

প্রতিদিন পেয়ারা খাওয়া 

প্রতিদিন নিয়মিত পেয়ারা খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। 

যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের জন্য নিয়মিত পেয়ারা খাওয়া  অপকারিতা অনেক ডায়াবেটিসের জন্য। 

হাড়কে সুস্থ রাখতে ও ত্বককে সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিদিন পেয়ারা খাওয়া। 

কোষ্ঠকাঠিন্য ও রক্তচাপ কমাতে প্রতিদিন নিয়মিত পেয়ারা খাওয়া সকলের উচিত। 

পেয়ারার গাছ লাগানোর নিয়ম 

প্রথমে জমি নির্বাচন করতে হবে। জমিতে যাতে সব সময় পানি দেওয়া যায় সে ব্যবস্থা রাখতে হবে। গাছ লাগানোর জন্য উন্নত মানের বীজ সংগ্রহ করতে হবে। গাছ নির্দিষ্ট পরিমাণ দূরত্বে লাগাতে হবে। গাছে নিয়মিত যত্ন নিতে হবে ও পানি দিতে হবে, গাছে সার প্রয়োগ করতে হবে।

গাছে ফুল আসার পর খেয়াল রাখতে হবে যাতে পোকা মা করে আক্রমণ না করে। গাছে যখন পেয়ারা ধরবে তখন কিছুদিন পর পলির মাধ্যমে পেয়ারা ঢেকে রাখতে হবে যাতে পোকামাকড় আক্রমণ করতে না পারে। 

গাছে যখন পোকামাকড়ের আক্রমণ দেখা দেবে তখন স্যার প্রয়োগ করবেন এবং যে ফলে আক্রমণ করা হয়েছে সে ফলটিকে ছিঁড়ে দূরে ফেলে দিতে হবে।পোকাতে আক্রমণ করা ফল কখনোই বাগানের আশেপাশে রাখা যাবেনা বা অন্য ফলের কাছে রাখা যাবে না।

পলি মারার কিছুদিন পর পেয়ারা গাছে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যাতে পেয়ারাতে না পড়ে কীটনাশক। গাছের গোড়াতে নিয়মিত পানি দিতে হবে এবং গাছের আগাছা কেটে ফেলতে হবে।

পেয়ারা নির্দিষ্ট পরিমাণ বড় হওয়ার পর পেয়ারা সংগ্রহ করার জন্য পেয়ারার ওপরে ডাল সহ কাটতে হবে। কখনোই পেয়ারা টেনে ছেড়া যাবে না যার ফলে পেয়ারার ক্ষতি হয়ে থাকে। 

পেয়ারাকে বাজার জাত করার জন্য বেশি নাড়াচাড়া করা যাবে না পেয়ারা কে। গাছ থেকে পেয়ারা নামানোর উপযুক্ত সময় হচ্ছে প্রতি সকালবেলা। কখনোই দুপুরে বা বিকালে পেয়ারা সংগ্রহ করা যাবে না।

সকালবেলা পেয়ারা নামানোর পর সুন্দরভাবে ক্যারেট করে বাজারে নিয়ে যেতে হবে। পেয়ারার প্রচুর চাহিদার জন্য বাজারে খুব অল্প সময়ে তা বিক্রি করা যায়। যার ফলে আপনি খুব অল্প সময়ে সফল ব্যবসায়ী হতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url