অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা ও অপকারিতা [বিস্তারিত দেখুন]

অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা ও অপকারিতা জানার জন্য নিশ্চয়ই আজকের এই আর্টিকেলে আপনি প্রবেশ করেছেন। আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনি জানতে পারবেন অর্জুন গাছের ছালের কি কি উপকারিতা রয়েছে।
অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা ও অপকারিতা এখানে দেখুন [বিস্তারিত]

অর্জুন গাছের অপকারিতা এবং অর্জুন কাছ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। অর্জুন গাছের ছালকে ভিজিয়ে ও পাউডার হিসেবে খেতে হয়। প্রাচীন কাল থেকেই এই অর্জুন গাছের ব্যবহার হয়ে আসছে যার সম্পর্কে জানতে পারবেন এই আর্টিকেল থেকে।

পোস্ট সূচিপত্রঃঅর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা ও অপকারিতা

অর্জুন গাছের ছাল কি

অর্জুন গাছ হল একটি চির হরিণ বৃক্ষ। অর্জুন শব্দটির অর্থ হচ্ছে উজ্জ্বল বা সাদা এবং অর্জুন গাছের ফুলগুলি সাদা রংয়ের হয়ে থাকে। অর্জুন গাছের ছালের অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় অর্জুন গাছের ছাল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আপনি জানলে আশ্চর্য হয়ে যাবেন যে অর্জুন গাছের ছালের এত উপকারিতা রয়েছে যা পুরো মানব দেহের জন্য উপকারী।

বর্তমান সময়ে অর্জুন গাছ অতি পরিচিত একটি বৃক্ষ গাছ। অর্জুন গাছের ছালের অনেক উপকারিতা রয়েছে যার ফলে অর্জুন গাছ পরিচিত লাভ করেছেন। প্রতিদিন সকালে অর্জুন গাছের ছাল ভিজিয়ে খেলে অনেক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। শরীরকে সতেজ রাখতে ও সুস্থ রাখতে অর্জুন গাছের ছালের বিপরীত নেই।

ঔষধি গাছের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এই অর্জুন গাছ যা রাস্তার আশেপাশে দেখা যায়। অর্জুন গাছ অনেকটা লম্বা হয়ে থাকে সেই অর্জুন গাছ থেকেই ছাল ছড়ানো হয় খাওয়ার জন্য। অনেকেই অর্জুন গাছের ছালকে রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে পানি পান করেন।

ডাক্তারি পরামর্শ অনুযায়ী অর্জুন গাছের ছাল খেলে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং অনেক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে এই অর্জুন গাছের ছাল অনেক মুদিখানার দোকানে পাওয়া যায় এবং আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের কাছে পাওয়া যান। এই অর্জুন গাছের ছাল একটি অতি প্রয়োজনীয় যার শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অর্জুন গাছ সম্পর্কে কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য 

বর্তমান সময়ে অর্জুন গাছের অনেক প্রয়োজনীয় তথ্য রয়েছে যা সকলের জানা অতি প্রয়োজন। আপনি যদি অর্জুন কাজ সম্পর্কে জেনে থাকেন তাহলে আপনার শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধ নিজে নিজে তৈরি করতে পারবেন। অর্জুন গাছ ছালের প্রয়োজনীয়তা বর্তমানে অনেক রয়েছে।

গ্রামের আনাচে-কানাচে এই অর্জুন গাছ দেখা যায়। শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য অর্জুন গাছের ছাল একটি কার্যকারী উপায়। অর্জুন গাছের অনেক প্রয়োজন এ তথ্য রয়েছে তার মধ্যে কিছু প্রজননের তথ্য আলোচনা করা হলো।

  1. সাধারণ নাম: অর্জুন বা সাদা মারুদ।
  2. বৈজ্ঞানিক নাম: টারমিনালিয়া অর্জুন। 
  3. সংস্কৃত নাম: অর্জুন, ধুবলা, নিদিসায্য।
  4. ব্যবহৃত অংশ: অর্জুন গাছের ছাল বা বাকল ও পাতা। 
  5. কর্মশক্তি: অর্জুনের ছাল বা বাকল খাওয়ার ফলে শরীরের কর্মশক্তি বৃদ্ধি পায়।

অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা কি কি 

অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা অনেক রয়েছে। আমাদের বাড়ির আশেপাশে এমন কিছু গাছ রয়েছে যা ঔষধের জন্য দারুন কার্যকরী তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অর্জুন গাছ। অর্জুন গাছের ছালে অনেক গুণ রয়েছে। এ অর্জুন কাছে ছাল পারে আপনার নানান রোগ দূর করে দিতে। 

মেদ দূর করতে প্রয়োজনঃ আমাদের মধ্যে অনেকেই প্রায় অতিরিক্ত মেদ নিয়ে সমস্যায় রয়েছেন। প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় অর্জুন গাছের ছালের মিশ্রিত পানি পান করলে কিছুদিনের মধ্যেই প্রচুর পরিমাণে মেদ কমে যাবে। অর্জুন গাছের ছাল এত দ্রুত কাজ করে যে আপনি এক মাসের মধ্যেই আপনার মেদের দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন।

ত্বকের উজ্জ্বলতাঃ অর্জুন গাছের ছাল আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। অনেকের মুখে কালো দাগ হয়ে যায় তা দূর করার জন্য অর্জুন গাছের ছাল, বাদাম, হলুদ একত্রে মিশিয়ে ত্বকের ওপর প্রয়োগ করতে পারেন তাহলে আপনার মুখের কালো দাগ দূর হয়ে যাবে এবং উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।

মুখের ব্রণ বা ফোস্কা এর চিকিৎসাঃ অনেকে মুখের ব্রণ বা ফোস্কা নিয়ে বিরক্তির মধ্যে রয়েছেন বিশেষ করে মেয়েরা। মুখের ফোস্কা বা ব্রণ দূর করার জন্য অর্জুন গাছের ছাড় ব্যবহার করতে পারেন। ব্যবহার করার জন্য নারকেল তেলের সাথে অর্জুন গাছের পাউডার একত্রে মিস করে আপনার মুখে ব্রণ বা ফোস্কার ওপর লাগাতে পারেন তাহলে আপনি এই ব্রণ বা ফোস্কা থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন।

উচ্চ রক্তচাপ কমাতেঃ উচ্চ রক্তচাপ কমাতে অর্জুন গাছের ছালকে প্রথমে পাউডার বানাতে হবে তারপর এক চামচ পাউডার ২ ক্লাস জলে মিশিয়ে গরম করে সকাল ও সন্ধ্যায় পান করবেন তাহলে আপনার উচ্চ রক্তচাপ কমে যাবে। উচ্চ রক্তচাপ কমাতে অর্জুন গাছ ছালের বিকল্প নেই বললেই চলে। রক্তচাপ কমানোর জন্য অর্জুন গাছের ছাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

চুল মজবুত ও বৃদ্ধিঃ চুলের মজবুত ও বৃদ্ধির জন্য অর্জুন গাছের ছাল মিশ্রিত পানি অনেক উপকারী। চুলকে শক্তিশালী করতে অর্জুন গাছের ছাল অনেক সাহায্য করে। অর্জুন গাছের ছালের মিশ্রিত পানি নিয়মিত চুলে দিলে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই চুলের মজবুত ও বৃদ্ধির ফলাফল পাওয়া যায়।

কাশি থেকে মুক্তিঃ অর্জুন গাছের ছালের পাউডার ও অর্জুন গাছের পাতার সাথে মিশ্রণ করে এবং এর সাথে মধু মিশিয়ে কিছুদিন সেবন করার মাধ্যমে কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আবার মধুকে বলা হয় সকল রোগের মহা ওষুধ।

প্রস্রাবের জ্বালাপোড়াঃ অনেকের প্রস্রাবের সমস্যা রয়েছে যেমন প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া। অর্জুন গাছের ছালের পানি নিয়মিত প্রতিদিন একবার করে খেলে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া দূর হয়ে যায়।

মধুমেহের (সুগার) রোগীর জন্যঃ মধুমেহের রোগীরা অর্জুন গাছের ছাল ব্যবহার করে তাদের সমস্যা দূর করতে পারেন। এর জন্য অর্জুন গাছের সালের পাউডার নিয়মিত প্রতিদিন দুইবার করে খাওয়া প্রয়োজন। মধুমেহের থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় হচ্ছে অর্জুন গাছের ছাল।

গলা ব্যথা থেকে মুক্তিঃ যাদের গলা ব্যথা করে তারা যদি অর্জুন গাছের ছাল নিয়মিত সকাল ও সন্ধ্যা দুইবার করে হালকা গরম কুসুম পানি করে খাই তাহলে কয়েকদিনের মধ্যে গলা ব্যথা সেরে উঠবে।

অ্যাজমাঃ অ্যাজমা থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি মহা ওষুধ হচ্ছে অর্জুন গাছের ছাল। অর্জুন গাছের ছাল দুধের সাথে বা পায়েস এর সাথে মিশিয়ে খেয়ে নিতে পারেন যা আপনার অ্যাজমা থেকে মুক্তি পেতে অনেক সাহায্য করে থাকে।

বুকের ধরফরানিঃ যাদের একটু কোন কিছু করলেই বুক ধরফর করে তাদের জন্য অর্জুন গাছের ছাল প্রতিদিন সকাল ও বিকাল একবার করে পানির সাথে মিশ্রিত করে খাওয়া উচিত। অর্জুন গাছে ছাল পানির সাথে মেশানোর পর কিছুক্ষণ রাখতে হবে তারপর সেই পানিটা খেয়ে ফেলতে হবে তাহলে এর উপকার পাওয়া যাবে।
 
হৃদরোগঃ অর্জুন গাছের ছালে প্রচুর পরিমাণে কো ইনজাইম রয়েছে যা হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাক থেকে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে । অর্জুন গাছের ছাল রক্তকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে অত্যন্ত সাহায্য করে।
 
ক্যান্সারঃ অর্জুন গাছের ছাল ক্যান্সার কোষের বন্ধন কমাতে সাহায্য করে। প্রতিনিয়ত অর্জুন গাছের ছাল খেলে ক্যান্সারের কোষের বর্ধন কমাবে এবং এর হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

শরীর দুর্বলঃ শরীরের দুর্বলতা কমাতে অর্জুন গাছের ছাল অনেক উপকারে আসে। অর্জুন গাছের ছালের রস নিয়মিত খান তাহলে শরীর কখনোই দুর্বল হবে না। শরীরের দুর্বলতা কমাতে অর্জুন গাছের ছাল নিয়মিত খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অর্জুন গাছের ছালের অপকারিতা 

অর্জুন গাছের ছালে শক্তিশালী হাইপোগ্লাইসেমিক রয়েছে। এর জন্য আপনার রক্তের চীনির মাত্রা যদি স্বাভাবিক ভাবেই কম থেকে থাকে বা আপনি অসুস্থ হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনি একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। 

  • তিক্ত সাধ রয়েছে এই অর্জুন গাছের ছালে। প্রথমত খেতে একটু অসুবিধা হয়ে থাকে সকলের যা পরবর্তীতে অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়।
  • যাদের সুগার রয়েছে তাদের জন্য অর্জুন গাছের ছাল যথেষ্ট সাবধানে ব্যবহার করা উচিত। 
  • আপনি যদি অন্য ওষুধ খেয়ে থাকেন তারপর যদি অর্জুন গাছের ছাল খেতে চান তাহলে অবশ্যই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নেবেন।

গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অর্জুন গাছের ছাল খাওয়া যাবে না। গর্ভবতী মহিলারা অর্জনের ছাল খেলে অনেক ক্ষতি হয়ে থাকে। গর্ভবতী অবস্থায় অর্জুনের ছাল খাওয়া থেকে বিরত থাকায় ভালো। 

স্বাস্থ্যের উপকারের জন্য অর্জুন গাছের ছাল 

প্রত্যেক মানুষের কোন না কোন সমস্যা রয়েছে। প্রত্যেক মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অর্জুন গাছের ছাল নিয়মিত খাবার বিকল্প নেই। অর্জুন গাছের ছাল রক্তপাত নিয়ন্ত্রণ করে হাড়ের সমস্যা জন্য অত্যন্ত উপকারী। স্বাস্থ্যের জন্য অর্জুন গাছের ছাল আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত।

প্রত্যেক মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য একটি মহা ওষুধ হচ্ছে অর্জুন গাছের ছাল নিয়মিত খাওয়া। অর্জুন গাছের ছাল হচ্ছে অতি প্রয়োজনীয় একটি উদ্ভিদ যার মাধ্যমে শরীরকে সুস্থ রাখা যায়। অনেক রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা রয়েছে এই অর্জুন গাছের ছালের মধ্যে।

আপনি যদি প্রতিদিন সকালে অর্জুন গাছের ছাল খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীরের দুর্বলতা অল্প কিছুদিনের মধ্যে কমে যাবে। অনেকেই এই অর্জুন গাছের ছালকে গুঁড়ো করে পাউডার হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। অর্জুন গাছের ছালের পাউডার নানান তরকারির সাথে মিশাল করে খেয়ে থাকেন।

অর্জুন গাছের ছাল ব্যবহারের নিয়ম 

অর্জুন গাছের ছাল সাধারণত মানুষ ভিজিয়ে খেয়ে থাকে এবং অনেকে পাউডার করে থাকে। অর্জুন গাছের ছালের উপকার পাওয়ার জন্য আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক এটিকে বড়ি হিসেবে খাওয়া এবং চা হিসেবে খাবার পরামর্শ দিয়েছেন। 

অর্জুন গাছের ছাল অনেক ওষুধের মধ্যে রয়েছে যা আমাদের জানা নেই। অর্জুনের গাছ অনেক উপকারে আসে ওষুধ ব্যতীত যেমন অর্জুনের কাঠ ঘরবাড়ির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বস্তু। 

অর্জুন গাছের কাঠ জ্বালানি হিসেবে আমরা ব্যবহার করে থাকি এবং অর্জুন গাছের জন্য আমরা রৌদ্র থেকে ছায়া পেয়ে থাকি। যেকোনো পুকুরের পাশে অর্জুন গাছ লাগানোর ফলে বায়ু দূষণ থেকে রক্ষা করে জলকে বিশুদ্ধ রাখে।

রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ঔষধি গাছ হচ্ছে অর্জুন গাছ। অর্জুন গাছের ছাল আপনার ইচ্ছা মতো ব্যবহার করতে পারেন। অনেকেই খালি পেটে অর্জুন গাছের ছাল বা পাউডার খেয়ে থাকেন। আবার অনেকেই তরকারির সাথে মিছিল করে খেয়ে থাকেন। আপনার ইচ্ছামত অর্জুন গাছের ছালকে ব্যবহার করতে পারেন।

অর্জুন গাছের ছালের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

শরীরের জন্য অর্জুন গাছের ছালে তেমন কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই এজন্য অর্জুন গাছকে মহা ঔষধের গাছ বলা হয়ে থাকে। ডাক্তারি পরামর্শ অনুযায়ী অর্জুন গাছের ছাল ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অর্জুন গাছের ছাল খাওয়াই ভালো। গর্ব অবস্থায় অর্জুন গাছের ছাল খেলে নানান সমস্যা হয়ে থাকে। 

অর্জুন গাছের ছালে হাইপোগ্লাইসেমিক এর প্রভাব রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। এর জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অর্জুন গাছের ছাল খাওয়াই ভালো।

আপনার যেকোন ধরনের সমস্যার জন্য আপনি ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে অর্জুন গাছের ছাল নিয়মিত খেতে পারেন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে। 

ঔষধি গাছ অর্জুন গাছ 

অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা ও অপকারিতা, ইতিমধ্যেই আলোচনা করা হয়েছে আজকের এই আর্টিকেলে। আপনি যদি না জেনে থাকেন তাহলে আর্টিকেলের প্রথম থেকে জেনে আসতে পারেন।অনেক সময় বলা হয়ে থাকে বাড়িতে একটি অর্জুন গাছ থাকা আর একটি চিকিৎসক থাকা প্রায় একই কথা।

অর্জুন গাছ প্রাচীনকাল থেকেই মানবজাতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিয়েছে ঔষধি গুণের জন্য। শরীরকে সতেজ রাখতে অর্জুন গাছের বিকল্প কোন গাছ নেই। ঔষধি গাছ হিসেবে পরিচিত হচ্ছে এই অর্জুন গাছ। আপনার বাড়ির আনাচে-কানাচে এই ঔষধি কাজ দেখতে পাবেন। ঔষধি গাছের ছাল বা পাউডার মানব দেহের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী একটি ঔষধি উপাদান।

আপনি যদি অর্জুন গাছের ছাল প্রতিদিন খেতে পারেন তাহলে অনেক ক্ষতিকারক রোগ থেকে বাঁচতে সক্ষম হবেন। অর্জুন গাছের ছাল অনেক ঔষধে ব্যবহার করা হয়ে থাকে যা থেকে মানুষ উপকৃত হয়ে থাকে। অর্জুন গাছ শব্দটি হচ্ছে একটি অতি পরিচিত শব্দ। অর্জুন গাছকে ঔষধি গাছ বলার কারণ হচ্ছে অর্জুন গাছের উপকারিতা। অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা অনেক রয়েছে।

 অর্জুন গাছ চাষাবাদ এর নিয়ম 

অর্জুন গাছ একটি পত্রঝরা বৃক্ষ। সর্বপ্রথম একটি গাছ পরিণত বয়সে ১০ থেকে ১৫ মিটার লম্বা হয়ে থাকে। অর্জুন গাছের পাতা লম্বা আকৃতির। বর্তমানে অর্জুন গাছ প্রায় দেশেই পাওয়া যায়।

বীজ সংগ্রহ করতে হয় ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত। বীজের ওজন প্রতি কেজিতে ৩০০ থেকে ৫০০ টি বীজ হয়ে থাকে।

প্রথমে বীর সংগ্রহ করতে হবে তারপর চারা উত্তরণ ও রোপণ। উপযোগী মাটি নির্বাচন করে নিতে হবে।

ছাল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। অর্জুন গাছের ছালের পাশাপাশি অন্যান্য ব্যবহার।

অর্জুন গাছের কাঠ খুবই শক্ত এজন্য কাঠকে ব্যবহার করা হয় গৃহ নির্মাণের কাজে এবং অর্জুন গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।

অর্জুন গাছের ছাল ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম 

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অর্জুন গাছের ছাল ভিজিয়ে খাওয়ায় ভালো যা কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখার পর খেতে হয়। অর্জুন গাছের ছাল ভিজানোর পূর্বে তা ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে এবং সেই ছাল থেকে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ছোট করে নিতে হবে।

অর্জুন গাছের ছাল পানির সাথে মিশিয়ে কিছুক্ষণ রাখার পরে শুধু সেই পানিটাকে খেতে হয়। অনেকে অর্জুন গাছের ছাল অনেকক্ষণ ভিজিয়ে রাখে যা পরবর্তীতে সে পানিটাকে হালকা গরম কুসুম পানি করে খায়।

অর্জুন গাছের ছাল ভিজিয়ে সে পানিটা খেতে অনেকটা কসলা ও তিক্ত মনে হয় যার অনেক উপকারিতা রয়েছে।

অর্জুন গাছের ছালের গুড়া ও পাউডার করে খাওয়ার নিয়ম 

অর্জুন গাছের ছাল গুড়া পাউডার করে খাওয়া যায় যা যে কোন কিছুর সাথে মিশাল করে আপনি খেতে পারেন। অর্জুন গাছের ছাল প্রথমে আপনাকে সংগ্রহ করতে হবে, তারপর আপনাকে সেই ছালটি প্রয়োজন অনুযায়ী কেটে নিতে হবে এবং পরিস্কার করতে হবে।

অর্জুন গাছের ছাল যে কোন কিছুতে বেটে গুড়ো করে ফেলতে হবে তারপর সেটিকে আপনি একটি বৈয়ম এ ভরে রাখতে পারেন। অর্জুন গাছের ছাল পাউডার হওয়ার পর আপনি নিয়মিত যেকোনো সময় আপনার ইচ্ছামত খেতে পারেন এবং তরকারির সাথে মিশাল করে খেতে পারেন। 

অর্জুন গাছের ছালের রস খাওয়ার নিয়ম 

আপনি অর্জুন গাছের ছালটিকে পরিষ্কার করার পর সেটিকে শক্ত কোন কিছু দিয়ে চিপে রস বের করে নিতে পারেন। অর্জুন গাছের ছাল এর রস বের করার জন্য কিছু আধুনিক মেশিন রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি নিমিষেই রস বের করে নিতে পারেন।

এমনিতে রস বের করতে অনেক সমস্যা হতে পারে যেটাতে আপনার সুবিধা মনে হয় সেটাতে আপনি শুধু অর্জুন গাছের ছালের রস টি বের করে নিবেন। তারপর সেটি কে আপনি নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন।

অর্জুন গাছের ব্যবহার 

অর্জুন গাছের ছাল ব্যতীত অর্জুন গাছ এমনিতেও অনেক উপকারে আসে আমাদের। অর্জুন গাছ এর মাধ্যমে আমরা সূর্যের আলো থেকে বাঁচতে পারি। 

অর্জুন গাছের কাঠ অনেক শক্ত হওয়ার ফলে আমরা আমাদের ঘরবাড়ি বানাতে পারি ও ঘরের আসবাতপত্র বানাতে পারি। অর্জুন গাছ আমাদের জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করতে পারি।

অর্জুন গাছের পাতার উপকারিতা 

অর্জুন গাছের ছাল ব্যতীত অর্জুন গাছের পাতারও অনেক উপকারিতা রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অর্জুন গাছের পাতা ক্ষত নিরাময়ে অনেক  সুন্দর কাজ করে থাকে।

লিভারের জন্য ও স্বাস তন্ত্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই অর্জুন গাছের পাতা।

ডাক্তারি পরামর্শ অনুযায়ী অর্জুন গাছের পাতার এতটা উপকারিতা রয়েছে যে তা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অর্জুন গাছের ছাল ও পাতা এবং অর্জুন গাছ সব কিছুই কোন না কোন কিছু উপকার করে থাকে। 

অর্জুন গাছের ফলের উপকারিতা 

অর্জুন গাছের ছাল,পাতা ও ফল তিনটায় ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ডাক্তারি পরামর্শ ও আয়বেদিক পরামর্শ অনুযায়ী অর্জুন গাছের ফল এর অনেক উপকারিতা রয়েছে যা সকল মানুষের জন্য উপযোগী।

বৈজ্ঞানিক গবেষণা থেকে জানা যায় যে অর্জুন গাছের ফল,পাতা ও ছাল এতটা উপকারে যে অন্য খুব কাজ কম গাছে রয়েছে। এই সকল কিছুর জন্য অর্জুন কাজকে ঔষধি গাছ হিসেবে ডাকা হয়ে থাকে। অর্জুন গাছের ফলের, পাতা ও ছালের ব্যবহার প্রাচীন কাল থেকেই চলে আসছে। 

অর্জুন গাছের ছাল কোথায় পাওয়া যায় 

অর্জুন গাছের ছাল সাধারণত বাড়ির আশেপাশেই পাওয়া যায় এবং ঝোপ জঙ্গলে। আমাদের বাড়ির আছে পাশে নানান ধরনের গাছ রয়েছে যা আমাদের জানা নেই কোন গাছের নাম কি, কোন গাছে কি উপকার রয়েছে। বেশিরভাগ অর্জুন গাছ দেখা যায় বাড়ির আশেপাশেই ও রাস্তার ধারে।

যেকোনো রাস্তার ধারে এই অর্জুন গাছ থাকতে পারে যেখান থেকে আপনি অর্জুন গাছের ছাল সংগ্রহ করতে পারেন এবং অনেকেই এই অর্জুন গাছ জমিতে চাষ করে থাকে বা লাগিয়ে থাকে। অর্জুন গাছের ছাল সংগ্রহ করার জন্য আপনাকে প্রথমত অর্জুন গাছটিকে চিনতে হবে।

অর্জুন গাছের উপকারিতা প্রত্যেকটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। অর্জুন গাছের ছাল সংগ্রহ করে খাওয়া আপনার শরীরের জন্য ও রোগ ব্যাধি দূর করার জন্য অত্যন্ত উপকারী।

অর্জুন গাছের পাতা ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা 

অর্জুন গাছের পাতা দেখতে অনেকটা লম্বা এবং এর ঔষধি গুনাগুন অনেক রয়েছে। অর্জুন গাছের পাতা আপনি বেটে খেতে পারেন। অর্জুন গাছের পাতা আপনি শাকসবজি ও তরকারির সাথে মিশাল করে খেতে পারেন।

অর্জুন গাছের ছালের যেমন উপকারিতা রয়েছে ঠিক তেমনি অর্জুন গাছের পাতার উপকারিতা রয়েছে অনেক। শরীরকে সুস্থ রাখতে  অর্জুন গাছের ছাল ও পাতা খাওয়ার বিপরীত নেই। অর্জুন গাছে পাতা খাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার অন্য কোন সমস্যা আছে কিনা তা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিয়ম অনুযায়ী খেতে পারেন।

অর্জুন গাছের ফুল 

অর্জুন গাছের ফুল গ্রীষ্মকালে ফুটে থাকে। অর্জুন গাছের ফুল দেখতে অত্যন্ত সুন্দর যা সকলকে মুগ্ধ করে থাকে। অর্জুন গাছের ফুল সাধারণত সবসময় দেখা যায় না তার একটি নির্দিষ্ট মৌসুমে ফুল ফুটে থাকে।

অর্জুন গাছের পাতা ও ছালের যেমন উপকারিতা রয়েছে ঠিক তেমনি সৌন্দর্যময় হচ্ছে অর্জুন গাছের ফুল। খুব সহজেই মানুষের মনকে আকর্ষিত করতে পারে এই অর্জুন গাছের ফুল। একটি সুগন্তময়ী ও আকর্ষিত ফুল হচ্ছে অর্জুন গাছের ফুল।

লেখক এর শেষ কথা 

অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে নিশ্চয়ই আপনি এখন জানতে পেরেছেন। বর্তমান সময়ে অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রত্যেক মানুষের জন্য প্রতিদিন সকালে অর্জুন গাছের ছালের রস খাওয়া অত্যন্ত কার্যকরী একটি উপাদান শরীরের জন্য।

যাদের নানান ধরনের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য ডাক্তারি পরামর্শ অনুযায়ী অর্জুন গাছের ছাল বা পাউডার খাওয়া উচিত। কখনোই অতিরিক্ত অর্জুন গাছের ছাল খাওয়া উচিত নয় কোন মানুষের জন্য।

ডাক্তারি পরামর্শ অনুযায়ী অর্জুন গাছের ছাল নানান কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে যা অনেকে জানা নেই আপনি যদি না জেনে থাকেন তাহলে আর্টিকেলটি একবার মনোযোগ সহকারে করে ফেলুন। আজকের এই আর্টিকেলে আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url